HSC পরীক্ষা 2020 হবেনা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি

HSC পরীক্ষা 2020 হবেনা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।

২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে না। এর পরিবর্তে জেএসসি ও এসএসসির এবং সমমানের পরীক্ষার  ফলের ভিত্তিতে  মূল্যায়ন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ দুপুরে এ ঘোষণা দিয়েছেন। একটি পরামর্শক কমিটি করা হবে। কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকবেন।

এবারে ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে।

বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারির কারণে এবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে না। জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফলের গড়ের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ণ করা হবে। মূল্যায়নের পর ডিসেম্বরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আজ এক ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
দীপু মনি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমাদের কাছে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সরাসরি গ্রহণ না করে একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরীক্ষা না নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন শিক্ষা বোর্ডগুলোর জন্য একেবারেই নতুন।
ফলে কীভাবে মূল্যায়ন করা হলে ফলাফল দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এবং শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনে এর বিরুপ প্রভাব পড়বে কি না সে বিষয়গুলোও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে দুটি পাবলিক পরীক্ষা অতিক্রম করে এসেছে। সেই দুটি পরীক্ষায় তাদের যে ফলাফল সেটাকে ভিত্তি ধরে এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মুল্যায়ন সঠিকভাবে যাচাইয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন।
এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মূল্যায়ন পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের হবে বলে উল্লেখ করেন।

এর আগে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার বিষয়সংখ্যা কমানো এবং কম সময়ে নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এ কথা  বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, কত কম সময়ে এবং কম সংখ্যক বিষয় নিয়ে পরীক্ষাটি নেয়া যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। এই বিষয়টি ছাড়াও করোনাকালের সঙ্কটময় এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি। আজ  শনিবার (২৭ জুন) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষা পরিস্থিতি অনুকূলে আসার ১৫ দিন পর এই পরীক্ষা নেয়া হবে। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিতে হবে। তাদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে সময় দিতে হবে।

এছাড়া,করোনার এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি।

দীপু মনি বলেন, “বড় একটা সমস্যা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি দেয়া নিয়ে। ফি না পেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষকদের কি করে বেতন দেবে? আর শিক্ষকরা তো অধিকাংশই বেতনের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ টিউশনি করাতেন, এখন তো সব বন্ধ।

HSC পরীক্ষা 2020 হবেনা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি

HSC পরীক্ষা 2020 কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি
HSC Exam Update 2020 Education Minister Dr Dipu Moni

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এক রকম নয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজেদের কিছুটা হলেও আগামী ক’মাস চলার মতো, কোনোভাবে চলার মতো সামর্থ্য আছে তাদেরকে অনুরোধ করব ফি কিস্তিতে হোক বা কিছুদিন বাদ দিয়ে পরে নেয়া হোক, সেটি করতে পারেন ভালো। না হলেও দেখেন কতটা ছাড় দেয়া যায়, সেটা চেষ্টা করবেন।”

দীপু মনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা অন্যান্য ঋণের জন্য চেষ্টা করতে পারেন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকতে পারে।

শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীর টালমাটাল আর্থিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ্ই বিরূপ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবক, দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। বিষয়টি ব্যাখ্যায় অভিভাবকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, কিছু বেতনতো দিতেই হবে। কারণ বর্তমানে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীর বেতন তো পুরোপুরি বন্ধ রাখা যায় না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যেমন আপনি হয়ত কাজে যেতে পারছেন না, কাজ বন্ধ আছে, কিন্তু আপনি কি তার জন্যে বেতন চাইবেন না? সরকারি হলে তো পুরো বেতনই পাচ্ছেন, সরকারি না হলে হয়ত বেতন কম দিচ্ছে, এখানেও আপনার সন্তানের ফি যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে দেয়া উচিত।”

পাশাপাশি যেসব অভিভাবক এই সঙ্কটে আর্থিক সমস্যায় পড়ে সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন দিতে পারছেন না, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

HSC পরীক্ষা 2020 নতুন রুটিন প্রকাশ হলে এখানে ক্লিক করে পাবেন

দীপু মনি আরও বলেন “আর যদি আপনার সামর্থ্য না থাকে সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারাও যদি কিছুটা ছাড় দিতে পারে, কিছুটা কিস্তিতে নিতে পারে, যতদূর সম্ভব উভয় পক্ষকেই আসলে মানবিক আচরণ করতে হবে।এটি এমন একটি সময় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনের কথা ভাবব, তেমনি আমাদের কিন্তু টিকে থাকবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এরপর আপনার সন্তানটিকে আপনি কোথায় ভর্তি করাবেন? সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের দুশ্চিন্তা নিশ্চয়ই।”

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “নিজেদেরও চলতে হবে। এর মধ্যে যতটা সম্ভব আমাদের উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে এবং মানবিক আচরণ করে এই দুর্যোগের সময়টা আমাদের পার করতে হবে।”

কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই কোটি কোটি শিক্ষার্থী, কোটি কোটি পরিবার, তাদেরকে নিশ্চয়ই আমরা এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সেজন্য আমাদের শিক্ষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সেটি ভাবতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো কোনো অবস্থাই নেই। আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তারপরে বুঝব যে কবে খোলা যাবে।”

সূত্রঃ দৈনিক শিক্ষা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটঃ https://moedu.gov.bd/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *