HSC পরীক্ষা 2020 হবেনা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।
২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে না। এর পরিবর্তে জেএসসি ও এসএসসির এবং সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ দুপুরে এ ঘোষণা দিয়েছেন। একটি পরামর্শক কমিটি করা হবে। কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকবেন।
এবারে ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে।
এর আগে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার বিষয়সংখ্যা কমানো এবং কম সময়ে নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এ কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, কত কম সময়ে এবং কম সংখ্যক বিষয় নিয়ে পরীক্ষাটি নেয়া যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। এই বিষয়টি ছাড়াও করোনাকালের সঙ্কটময় এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি। আজ শনিবার (২৭ জুন) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা পরিস্থিতি অনুকূলে আসার ১৫ দিন পর এই পরীক্ষা নেয়া হবে। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিতে হবে। তাদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে সময় দিতে হবে।
এছাড়া,করোনার এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, “বড় একটা সমস্যা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি দেয়া নিয়ে। ফি না পেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষকদের কি করে বেতন দেবে? আর শিক্ষকরা তো অধিকাংশই বেতনের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ টিউশনি করাতেন, এখন তো সব বন্ধ।
HSC পরীক্ষা 2020 হবেনা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এক রকম নয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজেদের কিছুটা হলেও আগামী ক’মাস চলার মতো, কোনোভাবে চলার মতো সামর্থ্য আছে তাদেরকে অনুরোধ করব ফি কিস্তিতে হোক বা কিছুদিন বাদ দিয়ে পরে নেয়া হোক, সেটি করতে পারেন ভালো। না হলেও দেখেন কতটা ছাড় দেয়া যায়, সেটা চেষ্টা করবেন।”
দীপু মনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা অন্যান্য ঋণের জন্য চেষ্টা করতে পারেন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকতে পারে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীর টালমাটাল আর্থিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ্ই বিরূপ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবক, দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। বিষয়টি ব্যাখ্যায় অভিভাবকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, কিছু বেতনতো দিতেই হবে। কারণ বর্তমানে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীর বেতন তো পুরোপুরি বন্ধ রাখা যায় না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যেমন আপনি হয়ত কাজে যেতে পারছেন না, কাজ বন্ধ আছে, কিন্তু আপনি কি তার জন্যে বেতন চাইবেন না? সরকারি হলে তো পুরো বেতনই পাচ্ছেন, সরকারি না হলে হয়ত বেতন কম দিচ্ছে, এখানেও আপনার সন্তানের ফি যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে দেয়া উচিত।”
পাশাপাশি যেসব অভিভাবক এই সঙ্কটে আর্থিক সমস্যায় পড়ে সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন দিতে পারছেন না, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
HSC পরীক্ষা 2020 নতুন রুটিন প্রকাশ হলে এখানে ক্লিক করে পাবেন
দীপু মনি আরও বলেন “আর যদি আপনার সামর্থ্য না থাকে সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারাও যদি কিছুটা ছাড় দিতে পারে, কিছুটা কিস্তিতে নিতে পারে, যতদূর সম্ভব উভয় পক্ষকেই আসলে মানবিক আচরণ করতে হবে।এটি এমন একটি সময় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনের কথা ভাবব, তেমনি আমাদের কিন্তু টিকে থাকবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এরপর আপনার সন্তানটিকে আপনি কোথায় ভর্তি করাবেন? সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের দুশ্চিন্তা নিশ্চয়ই।”
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “নিজেদেরও চলতে হবে। এর মধ্যে যতটা সম্ভব আমাদের উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে এবং মানবিক আচরণ করে এই দুর্যোগের সময়টা আমাদের পার করতে হবে।”
কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই কোটি কোটি শিক্ষার্থী, কোটি কোটি পরিবার, তাদেরকে নিশ্চয়ই আমরা এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সেজন্য আমাদের শিক্ষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সেটি ভাবতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো কোনো অবস্থাই নেই। আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তারপরে বুঝব যে কবে খোলা যাবে।”
সূত্রঃ দৈনিক শিক্ষা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটঃ https://moedu.gov.bd/